ঢালাইয়ের জন্য কোন সিমেন্ট ভালো, এই প্রশ্ন টি অনেকের মনে জাগে যখন তারা নতুন বাড়ি নির্মাণ বা ফ্লোর ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে। ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে সঠিক সিমেন্ট নির্বাচন করা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ, কারণ এটি ভবনের শক্তি, স্থায়িত্ব ও নিরা পত্তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। মানসম্মত সিমেন্ট ব্যবহার না করলে সময়ের সঙ্গে ফাটল ধরে।
ভাঙন কিংবা পানি ঢোকার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভালো ঢালাইয়ের জন্য সাধারণত, OPC
,Ordinary Portland Cement, বা PPC ,Portland Pozzolana Cement, সবচেয়ে
বেশি ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি সিমেন্টের নিজস্ব গুণা গুণ আছে, যা নির্ভর করে কাজের
ধরন ও আবহা ওয়ার ওপর। তাই ঢালা ইয়ের আগে সঠিক ব্র্যান্ড, গ্রেড এবং মিশ্রণ জেনে
নেয়া অত্যন্ত আপনার জন্য দরকার।
ঢালাই কাজের জন্য সঠিক সিমেন্ট নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ, কারণ এটি
নির্মাণের শক্তি ও স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে। সাধারণত ঢালাই কাজের জন্য এমন
সিমেন্ট বেছে নিতে হয় যা দ্রুত শক্ত হয়, ফাটল প্রতিরোধে সক্ষম এবং দীর্ঘ
মেয়াদে স্থায়িত্ব ধরে রাখে। ভুল সিমেন্ট ব্যবহারে ঢালা ইয়ের পর ফাটল ক্ষয় বা
দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক মানের সিমেন্ট নির্বাচন ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও
স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।
ঢালা ইয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় সিমেন্ট হলো Ordinary Portland Cement ,OPC,। এই
সিমেন্ট দ্রুত শক্ত হয় এবং ভারী নির্মাণ কাজে উপযুক্ত। বাড়ি ব্রিজ কলাম বা
বিমের মতো স্থায়ী কাঠা মোতে ,OPC, ব্যবহারে টেকসই ফলা ফল পাওয়া যায়। এর কণা
গুলো সূক্ষ্ম হওয়ায় ঢালাই ভালো ভাবে বসে এবং কাঠামো শক্তি শালী হয়। তবে এর
ব্যবহার কালে পানির অনুপাত সঠিক না হলে ফলা ফল খারাপ হতে পারে, তাই মিশ্রণের
অনুপাত ঠিক রাখা দরকার।
আরেকটি ভালো বিকল্প হলো ,Portland Pozzolana Cement, PPC, যা ঢালাই কাজে বেশ
জনপ্রিয়। এই সিমেন্টে পজোলানিক উপাদান থাকায় এটি ফাটল প্রতিরোধ করে এবং দীর্ঘ
স্থায়ী করে তোলে। PPC সিমেন্টের তাপ মাত্রা উৎপাদন তুলনা মূলক কম হয়, ফলে
ঢালাইয়ের পর ফাটল বা শুকানোর ক্ষতি কম হয়। এটি আর্দ্রতা ও লব ণাক্ত পরিবেশে ও
টিকে থাকে, তাই উপকূলীয় বা স্যাঁত সেঁতে অঞ্চলের নির্মাণে এটি উপযোগী হয়ে থাকে।
ঢালা ইয়ের জন্য সিমেন্ট বাছাইয়ের সময় ব্র্যান্ড ও মান যাচাই করা আপনার জন্য
দরকার। বাজারে অনেক কোম্পানি ভালো মানের সিমেন্ট সরবরাহ করে, যেমন, Holcim, Shah,
Seven Rings, Scan, এবং Crown Cement। এই ব্র্যান্ড গুলো সাধারণত মান বজায় রেখে
উৎপাদন করে এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড (BSTI) অনুসারে পরীক্ষিত হয়। তাই কেনার
আগে ম্যানুফ্যা কচারিং তারিখ, ব্যাচ নম্বর এবং সার্টিফিকেট দেখে নেওয়া উচিত
সবশেষে ঢালাইয়ের সাফল্য শুধু ভালো সিমেন্টে নয়, সঠিক মিশ্রণ মান সম্মত বালু
পাথর এবং সঠিক কিউ রিংয়ের উপর ও নির্ভর করে। সিমেন্টের মান যত ভালোই হোক, যদি
ঢালাইয়ের পর যথাযথ যত্ন নেওয়া না হয়, তবে ফাটল বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
তাই ভালো সিমেন্টের পাশা পাশি সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলেই কাঠামো হবে মজবুত,
স্থায়ী ও নিরাপদ হয়ে থাকে।
ঢালাই কাজে সিমেন্টের গুরুত্ব
ঢালাই কাজে সিমেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ উপাদান, যা নির্মাণের মূল
শক্তি প্রদান করে। এটি বালু ও পাথরের কণাগু লোকে এক বেঁধে শক্ত কাঠামো তৈরি
করে। সিমেন্টের মান ভালো না হলে পুরো ঢালাই দুর্বল হয়ে যায় এবং স্থায়িত্ব
কমে যায়। তাই ঢালাইয়ের ক্ষেত্রে সিমেন্টের গুণমান, ধরন ও মিশ্রণ অনুপাত সঠিক
হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সঠিক সিমেন্ট ব্যবহার করলে ভবনের ভিত্তি মজবুত হয় এবং
দীর্ঘ দিন স্থায়ী থাকতে পারে।
সিমেন্টের রাসায়নিক গঠন ঢালাইয়ের স্থায়িত্বে বড় ভূমিকা রাখে। এটি পানির
সংস্পর্শে এসে হাই ড্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্ত হয়ে যায়। ঢালাইয়ের সময়
এই প্রক্রিয়া ঠিক ভাবে সম্পন্ন না হলে ফাটল বা চিড় দেখা দিতে পারে। তাই
সিমেন্টের মান এবং সংরক্ষণের পদ্ধতিও সমান গুরুত্ব পূর্ণ। সঠিক ভাবে শুকনো ও
ছায়া যুক্ত স্থানে সিমেন্ট রাখলে এর গুণা গুণ বজায় থাকে এবং ঢালাই কাজের মান
অটুট থাকে।ঢালাই এর জন্য কোন সিমেন্ট ভালো, এই টপিক নিয়ে সুন্দর ভাবে আলোচনা
করা হয়েছে উপরে নিচে আপনাদেরকে মনে করা দেওয়ার জন্য এতবার বলা।
ঢালাই কাজে ব্যবহৃত সিমেন্টের ধরন ও খুব গুরুত্ব পূর্ণ। সাধারণত Ordinary
Portland Cement ,OPC, এবং Portland Pozzolana Cement ,PPC, ঢালাইয়ের জন্য
বেশি ব্যবহৃত হয়। OPC দ্রুত শক্ত হয় এবং ভারী নির্মাণ কাজে উপযুক্ত, অন্য
দিকে PPC দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়িত্ব দেয় ও ফাটল প্রতিরোধ করে। প্রকল্পের ধরন
অনুযায়ী সঠিক সিমেন্ট বেছে নেওয়া উচিত, যাতে কাঠামো হয় টেকসই ও নিরাপদ।
সবশেষে, ঢালাইয়ের মান শুধু সিমেন্টের উপর নির্ভর করে না, বরং সঠিক মিশ্রণ,
পানি ব্যবস্থা পনা ও কিউ রিংয়ের উপর ও নির্ভর শীল। ভালো মানের সিমেন্ট ব্যবহার
করেও যদি কিউরিং ঠিকভাবে না করা হয়, তবে কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই
সিমেন্টের গুণমানের পাশাপাশি কাজের যত্নশীলতা ও সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই
ঢালাইয়ের সাফল্যের মূল চাবি কাঠি।
ভালো সিমেন্ট চেনার সহজ উপায়
ভালো সিমেন্ট চিনতে হলে প্রথমে এর প্যাকেট ভালো ভাবে পরীক্ষা করা উচিদ।
মানসম্মত সিমেন্টের ব্যাগে সবসময় উৎপাদন তারিখ, ব্যাচ নম্বর ও ,BSTI, অনুমোদ
নের সিল থাকে। ব্যাগে লেখা স্পষ্ট ও ছেঁড়া না হলে বোঝা যায় এটি সংরক্ষিত
অবস্থায় ভালো আছে। সিমেন্ট হাতে নিয়ে দেখলে এর রঙ হালকা ধূসর বা সবুজাভ ধূসর
হবে এবং এতে দানাদার ভাব থাকা উচিত নয়। যদি সিমেন্টে দলা বা আর্দ্রতার চিহ্ন
থাকে, তবে বুঝতে হবে এটি পুরনো বা ভেজা হয়ে থাকে।
আর ও একটি সহজ উপায় হলো সিমেন্টের গঠন ও ঘনত্ব পরীক্ষা করা। হাতে নিয়ে মুঠো
করলে ভালো সিমেন্ট মসৃণ লাগে এবং সহজে দলা বাঁধে না। পানিতে দিলে সিমেন্ট ভেসে
না থেকে কিছু ক্ষণ পর নিচে বসে যায়, এটি মানসম্মত সিমেন্টের লক্ষণ হয়ে থাকে।
ভালো সিমেন্টে কোনো দুর্গন্ধ থাকে না এবং খোলার পর ধুলো তুলনা মূলক বেশি উড়ে।
সব শেষে, পরিচিত ব্র্যান্ড যেমন ,Holcim, Shah, Crown, বা ,Scan Cement,
ব্যবহার করলে মান নিয়ে সন্দেহের সুযোগ থাকে না। এভাবে সহজ পরীক্ষাতেই বোঝা
যায় সিমেন্টটি ভালো কি না সেই জন্য সঠিক নিয়মই দেখতে হয়।
OPC ও PPC সিমেন্টের পার্থক্য
OPC, বা ,Ordinary Portland Cement, হলো সবচেয়ে প্রচলিত ও দ্রুত শক্ত হওয়া
সিমেন্ট। এটি সাধারণত ক্লিন কার ও জিপ সামের মিশ্রণে তৈরি হয় এবং ভারী নির্মাণ
কাজে যেমন কলাম, বিম বা ফাউ ন্ডেশনে বেশি ব্যবহৃত হয়। OPC সিমেন্ট দ্রুত সেট
হয়, তাই যেখানে দ্রুত কাজ শেষ করতে হয়, সেখানে এটি উপ যুক্ত। তবে এর হাই
ড্রেশন তাপ বেশি হওয়ায় ঢালা ইয়ের পর ফাটল পড়ার ঝুঁকি থাকে। এটি এমন
নির্মাণে ভালো যেখানে উচ্চ শক্তি দ্রুত প্রয়োজন। ঢালাই এর জন্য কোন
সিমেন্ট ভালো, কিসের জন্য ভালো এটা নিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ,PPC বা Portland Pozzolana Cement, হলো এমন সিমেন্ট যা ক্লিন কারের
সঙ্গে প্রয়োজনে উপাদান যেমন ফ্লাই অ্যাশ বা আগ্নেয় ছাই মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
এটি ধীরে শক্ত হলেও দীর্ঘ মেয়াদে অধিক টেকসই ও ফাটল প্রতিরোধী। PPC সিমেন্টের
হাই ড্রেশন তাপ কম, ফলে বড় ঢালাই বা স্যাঁত সেঁতে এলাকায় এটি আদর্শ। এটি
রাসায়নিক প্রতি রোধ ক্ষমতা বেশি রাখে, তাই উপকূলীয় বা জলসং স্পর্শে থাকা
স্থাপ নায় PPC ব্যবহারে স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায় এবং যথেষ্ট শক্তিশালী হয়।
সংক্ষেপে,OPC সিমেন্ট দ্রুত শক্ত হয় এবং তাৎক্ষণিক শক্তি প্রয়োজন এমন কাজে
ভালো, আর PPC ধীরে শক্ত হলেও দীর্ঘ স্থায়ী ও পরিবেশ বান্ধব। যেখানে দ্রুত
নির্মাণ দরকার, সেখানে OPC উপযোগী আর যেখানে টেকসই, মসৃণ ও ফাটল মুক্ত কাঠামো
চাওয়া হয়, সেখানে PPC বেশি কার্য কর। নির্মাণের ধরন অনুযায়ী সঠিক সিমেন্ট
বেছে নিলেই কাঠামো হবে শক্ত, সুন্দর ও দীর্ঘ স্থায়ী হয়ে থাকবে।
ঢালাইয়ের জন্য কোন গ্রেডের সিমেন্ট উপযুক্ত
ঢালাইয়ের কাজে সিমেন্টের গ্রেড অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ কারণ এটি নির্মাণের শক্তি
ও স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে। সাধারণ ভাবে সিমেন্টের তিনটি গ্রেড পাওয়া যায় 34,
44 ও 54 গ্রেড। এর মধ্যে 53 গ্রেড সিমেন্ট ঢালাইয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, কারণ
এটি দ্রুত শক্ত হয় এবং উচ্চ কম্প্রেশন স্ট্রেন্থ দেয়। ভারী নির্মাণ যেমন ফাউ
ন্ডেশন, কলাম বিম ও ছাদের ঢালা ইয়ে এই গ্রেডের সিমেন্ট ব্যবহারে কাঠামো হয় আর ও
শক্ত ও টেকসই। সঠিক মিশ্রণ ও কিউরিং করলে 53 গ্রেড সিমেন্ট দীর্ঘ মেয়াদে
স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
অন্যদিকে, ছোট ঘরবাড়ি বা হালকা নির্মাণ কাজের জন্য 43 গ্রেড সিমেন্ট ও কার্যকর
হতে পারে। এটি শক্ত হতে কিছু টা বেশি সময় নেয়। তবে ফাটল কম হয় এবং মসৃণ
ফিনিশ দেয়। যেসব কাজে অতিরিক্ত ভার বহনের প্রয়োজন নেই। সেখানে এই গ্রেড ভালো
ফল দেয়। তবে যেকোনো ঢালাইয়ের আগে সাইটের প্রয়োজন ও প্রকৌশল পরামর্শ অনুযায়ী
গ্রেড নির্বাচন করা প্রয়োজন হয়ে থাকে প্রয়োজন হয়ে থাকে। সঠিক গ্রেডের
সিমেন্ট ব্যবহারে ভবন শুধু শক্ত নয়। দীর্ঘ স্থায়ী ও নিরা পদ ও হয়।
আবহাওয়া ও সিমেন্টের মানের সম্পর্ক
আবহাওয়া সিমেন্টের মান ও কার্য কারিতায় বড় প্রভাব ফেলে। সিমেন্ট একটি
সংবেদন শীল উপাদান যা তাপ মাত্রা ও আর্দ্রতার পরিবর্তনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া
দেখায়। অতিরিক্ত গরমে সিমেন্টের হাই ড্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুত হয়, ফলে ঢালা
ইয়ের পর ফাটল বা চিড় ধরতে পারে। আবার ঠান্ডা বা স্যাঁত সেঁতে আবহা ওয়ায়
সিমেন্ট শক্ত হতে দেরি করে এবং এর বন্ধন শক্তি কমে যায়। তাই ঢালাইয়ের আগে
আবহাওয়া অনুযায়ী পানি ও মিশ্রণের পরিমাণ সামঞ্জস্য রাখা জরুরী হয়ে থাকে
আর। যাতে কাঠামো থাকে শক্ত ও স্থায়ী।
বৃষ্টির সময় বা অতিরিক্ত আর্দ্র পরিবেশে সিমেন্ট সংরক্ষণে বিশেষ যত্ন নেওয়া
উচিত। যদি সিমেন্টে আর্দ্রতা ঢুকে যায়, তবে সেটি দলা পাকায় ও গুণা গুণ
হারায়। তাই সিমেন্ট সব সময় শুকনো, ছায়াযুক্ত ও বাতাস চলাচল যোগ্য স্থানে
রাখতে হয়। এছাড়া খুব গরমে ঢালাই করার সময় পর্যাপ্ত পানি ছিটিয়ে কিউরিং করলে
সিমেন্টের মান অটুট থাকে। অর্থাৎ, আবহাওয়া যেমনই হোক, সঠিক যত্ন ও ব্যবহার
পদ্ধতি অনুসরণ করলে সিমেন্টের মান বজায় রাখা সম্ভব এবং নির্মাণ হবে টেকসই ও
নিরাপদ হয়ে থাকে।
ব্র্যান্ড নির্বাচনের আগে কী কী দেখা উচিত
সিমেন্টের ব্র্যান্ড নির্বাচনের আগে প্রথমেই দেখতে হবে সেটি BSTI অনুমোদিত ও
মাননির্ভর কিনা। ভালো ব্র্যান্ডের সিমেন্টে সাধারণত ব্যাগের গায়ে স্পষ্টভাবে
উৎপাদনের তারিখ, ব্যাচ নম্বর ও মানের সিল থাকে। এগুলো না থাকলে বোঝা যায়
সিমেন্টটি মান সম্মত নয়। পাশাপাশি ব্র্যান্ডের বাজারে সুনাম ও গ্রাহক
প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দীর্ঘদিন ধরে নির্ভরযোগ্যভাবে সিমেন্ট
সরবরাহ করে এমন কোম্পানির পণ্য সাধারণত মানে ভালো হয়।
দ্বিতীয়ত, সিমেন্টের প্রকার ও গ্রেড ভালোভাবে যাচাই করতে হয়। প্রতিটি ব্র্যান্ড
বিভিন্ন ধরণের সিমেন্ট তৈরি করে, যেমন OPC, PPC বা 53 গ্রেড 43 গ্রেড ইত্যাদি।
নির্মাণের ধরন অনুযায়ী সঠিক সিমেন্ট নির্বাচন করা জরুরি। যদি ভারী নির্মাণ বা
ফাউন্ডেশন ঢালাই হয়, তবে উচ্চ গ্রেড সিমেন্টই ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া
ব্র্যান্ড টি নিয়মিত মান পরীক্ষায় অংশ নেয় কি না এবং পরিবেশ বান্ধব উৎপাদন
পদ্ধতি অনুসরণ করে কি না, সেটি ও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে থাকে।
সবশেষে, মূল্য ও সহজল ভ্যতা বিবেচনায় রাখা উচিত। অনেক সময় কম দামের সিমেন্ট
ব্যবহার করলে মানের ঘাটতি দেখা দেয়, যা ভবিষ্যতে কাঠামো দুর্বল করে তোলে। তাই
শুধু মাত্র দাম দেখে সিদ্ধান্ত না নিয়ে মান, সুনাম ও সার্টিফিকেট দেখে নির্বাচন
করা উচিত। সঠিক ব্র্যান্ড নির্বাচন করলে ঢালা ইয়ের গুণমান বাড়ে, ভবন হয় শক্ত
দীর্ঘ স্থায়ী ও নিরাপদ। ভালো ব্র্যান্ড মানে শুধু টেকসই কাঠামো নয়, ভবিষ্যতের
নিশ্চিন্ত বিনিয়োগও হয়।ঢালাই এর জন্য কোন সিমেন্ট ভালো, ঢালাইছে সিমেন্টের
জন্য কেমন কি ব্যবহার করতে হবে এটা নিয়ে আলোচনা কর হয়েছে।
সঠিক মিশ্রণ ও ঢালাইয়ের নিয়ম
সঠিক মিশ্রণই ভালো ঢালা ইয়ের মূল চাবি কাঠি। সিমেন্ট,বালু, পাথর ও পানির অনুপাত
ঠিক না থাকলে কাঠামোর শক্তি কমে যায়। সাধারণ ভাবে ঢালা ইয়ের জন্য ২,৩,৪ অনুপাত
সিমেন্ট বালু পাথর সবচেয়ে প্রচলিত ও কার্য কর। মিশ্রণের সময় পরিষ্কার পানি
ব্যবহার করতে হবে এবং অতিরিক্ত পানি দেওয়া যাবে না, কারণ এতে কংক্রিট দুর্বল
হয়ে পড়ে। উপকরণগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে সমান ঘনত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ঢালাইয়ের আগে
ফর্মওয়ার্ক বা ছাঁচ পরিষ্কার ও শক্তভাবে বসানো থাকাও অত্যন্ত জরুরি।
ঢালাইয়ের সময় ও পরে যথা যথ যত্ন বা কিউরিং করাও সমান গুরুত্ব পূর্ণ। ঢালাইয়ের
পর অন্তত ৭ দিন পর্যন্ত নিয়মিত পানি ছিটিয়ে আর্দ্র রাখতে হবে, যাতে সিমেন্ট
ঠিকভাবে শক্ত হয়। খুব গরমে বা বাতাসে ঢালাই দ্রুত শুকালে ফাটল ধরার আশঙ্কা
থাকে, তাই সেটি ঠেকাতে ঢেকে রাখা উচিত। ঢালাইয়ের সময় কম্পন বা ভাই ব্রেশন দিলে
বাতাস বের হয়ে কংক্রিট ঘন হয় এবং কাঠামো শক্ত হয়। সঠিক নিয়মে মিশ্রণ ও ঢালাই
করলে ভবন হয় মজবুত, ফাটলমুক্ত ও দীর্ঘ স্থায়ী।
দীর্ঘস্থায়ী ঢালাইয়ের জন্য করণীয় ও পরামর্শ
দীর্ঘ স্থায়ী ঢালা ইয়ের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ভালো মানের উপকরণ ব্যবহার করা।
সিমেন্ট বালু ও পাথর অবশ্যই পরিষ্কার ও মান সম্মত হতে হবে। সঠিক অনুপাতে মিশ্রণ
তৈরি করতে হবে,অতিরিক্ত পানি বা কম সিমেন্ট ব্যবহার করা ঢালাই দুর্বল করে দেয়।
ঢালাইয়ের আগে ফর্মওয়ার্ক ভালো ভাবে বসানো ও লিকেজ মুক্ত রাখা দরকার। ঢালাই
চলাকালীন নিয়মিত কম্পন দিলে কংক্রিটে বাতাসের ফাঁক থাকে না ফলে কাঠামো হয় ঘন ও
মজবুত। সময় মতো কাজ সম্পন্ন করাও স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্ব পূর্ণ।
ঢালাই শেষে কিউরিং বা যত্ন নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ ধাপ। অন্তত ৮ থেকে ১৫
দিন পর্যন্ত নিয়মিত পানি ছিটিয়ে ঢালাই আর্দ্র রাখতে হবে, যাতে সিমেন্টের বন্ধন
সম্পূর্ণ ভাবে শক্ত হয়। রোদ বা গরম বাতাসে ঢালাই দ্রুত শুকালে ফাটল ধরতে পারে,
তাই এটি ঢেকে রাখা উচিত। পাশা পাশি মান সম্মত ব্র্যান্ডের সিমেন্ট ও উপকরণ
ব্যবহার, আবহাওয়া অনুযায়ী সময় নির্বাচন, এবং অভিজ্ঞ কারিগরের সহায়তা নিলে ফলা
ফল আর ও ভালো হয়। এসব নিয়ম মেনে চললে ঢালাই হবে দীর্ঘ স্থায়ী, ফাটল মুক্ত ও
নিরাপদ ।
শেষ পাতাঃ ঢালাই এর জন্য কোন সিমেন্ট ভালো
ঢালাই এর জন্য কোন সিমেন্ট ভালো, এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে উপরে
সঠিক নিয়মে বলা আছে। এই ভাবে যদি আপনি সিমেন্ট চিনতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য
অনেক ভালো হবে। আর যদি আপনি পুরো কনটেন্ট পড়ে আসেন তাহলে আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ, সাথে থাকবেন অভিনন্দন, কনটেন্ট পরে যদি কিছু না বুঝতে পারেন,
তাহলে আপনি নিজহৃদয় আমার সাথে যোগাযোগ করবেন , আপনাকে সবকিছু বুঝিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url